শনিবার, ২৮ Jun ২০২৫, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

গোয়ালিয়ায় এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে কানাঘুষা

বিশেষ প্রতিবেদক:

রামুর খুনিয়াপালংয়ে এক ব্যক্তির আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে ব্যাপক রহস্য তৈরি হয়েছে। খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দক্ষিণ গোয়ালিয়া পালং এলাকার আবদুল্লাহ রশিদ (৫০) নামের ওই ব্যক্তি গত মঙ্গলবার রাতে কোনো রোগ ছাড়াই আকস্মিক মারা যান। গলায় আঘাতের চিহ্ন নিয়ে তড়িঘড়ি করে দাফন করায় এলাকারবাসী মাঝে কানাঘুষা চলছে। এই মৃত্যু অস্বাভাবিক বলে দাবি করছেন এলাকার অনেকে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আবদুল্লাহ রশিদ নামের ওই ব্যক্তি দীর্ঘ এক যুগ পুর্বে সৌদিআরব থেকে খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দক্ষিণ গোয়ালিয়াপালং এলাকায় এসে বসবাস করে আসছিল। তার পিতা মাতা মিয়ানমারের হলেও সকলে সৌদিআরব বসবাস করেন। দ্বীর্ঘদিন দক্ষিণ গোয়ালিয়াপালং এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসার সুবাদে পাঁচ বছর পুর্বে ওই এলাকায় বসবাসরত আরেক রোহিঙ্গা নাগরিক কবির আহামদ বৈদ্যের মেয়ে ইয়াছমিন আকতারকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে তিন বছরের একটি কন্যা শিশু রয়েছে। মৃত আবদুল্লাহ রশিদের স্বজনরা মাসে মাসে টাকাও পাঠাতেন। পাশাপাশি নিজস্ব ইজিবাইক চালিয়ে আয় করতেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পূর্ব গোয়ালিয়া এলাকার বেলাল উদ্দীনের সাথে মৃত আবদুল্লাহ রশিদের টাকার লেনদেন ছিলো। এই টাকা লেনদেন নিয়ে প্রায় তার বাড়িতে আসতো বেলাল উদ্দীন। এর মধ্যে আবদুল্লাহ রশিদের স্ত্রী ইয়াছমিন আকতারের সাথে বেলাল উদ্দীনের সম্পর্ক তৈরী হয়। এক পর্যায়ে পাওনা টাকা ও সম্পর্ককে কেন্দ্র করে আবদুল্লাহ রশিদের সাথে বেলাল উদ্দীনের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়। এক পর্যায়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পূর্বগোয়ালিয়া ব্রীজ এলাকায় দুজনের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। ওই দিন রাত ৮টার দিকে পাওনা টাকা চাইতে আবার আবদুল্লাহর বাড়িতে যান বেলাল উদ্দীন।

মৃত আবদুল্লাহর স্ত্রী ইয়াছমিন আকতার জানান, বেলাল উদ্দীন তার স্বামীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা পাওনা ছিল। এর মধ্যে ১৮শত টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকী পাওনা ৩২শত টাকা চাইতে তাদের বাসায় আসে বেলাল। কিছুক্ষন পর চলে যান। ওই দিন রাত ১২টার দিকে হঠাৎ তার স্বামী মারা যান। মৃত্যুর পর তার গলা লাল হয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে ইয়াছমিন আকতার জানান, হয়ত মাদক সেবন করার কারনে এমনটা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, কোনো রোগ-ব্যাধী ছাড়াই আকস্মিক মৃত্যু রহস্যজনক। এই মৃত্যু সাথে বেলাল উদ্দীন ও আবদুল্লাহ রশিদের স্ত্রী ইয়াছমিন আকতারের হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন প্রতিবেশিরা। তারা বলছেন, বেলাল উদ্দীন ও ইয়াছমিন মিলে কৌশলে তাকে হত্যা করেছে। এর কারণ হিসেবে স্থানীয়রা বলছেন, মৃতের গলায় আঘাতের দাগ, গলা লাল হয়ে যাওয়া ও তড়িগড়ি করে মৃতদেহ দাফন করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় নামাজে জানাজার সময় নির্ধারণ করলেও তড়িগড়ি করে সকাল ৯টায় মৃতদেহ দাফন করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রতিবেশি দাবি করেছেন, স্থানীয় মেম্বার কবির আহামদ মৃত আবদুল্লাহর স্ত্রী ইয়াছমিন আকতারের আপন খালু। স্থানীয় মেম্বার কবির আহামদসহ মিলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছে বেলাল উদ্দীন। যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তদন্তে করলে এই মৃত্যুর রহস্য উৎঘাটন হবে বলে দাবি করেন ওই প্রতিবেশিরা। তবে তদন্তের বিরোধিতা করছেন মৃতের স্ত্রী ইয়াছমিন আকতার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেলাল উদ্দীন বলেন, “আবদুল্লাহ গরীব মানুষ। টমটমের ব্যাটারি কিনতে স্থানীয় দোকানদার আবুল কালামের সুপারিশে আমি টাকা ধার দিয়েছিলাম। কিন্তু টাকা নিয়ে আমার সাথে আবদুল্লাহর কোনো তর্কাতর্কি বা সমস্যা হয়নি। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কবির আহামদও ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্ট্রোক করে আবদুল্লাহ মারা গেছেন। কিন্তু তাকে মেরে ফেলার গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এটি তদন্ত করারও প্রয়োজন নেই।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION